Learn Surah mulk (সূরা মুলক) – বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অনুবাদ ও ফযিলত

Rate this post

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

Introduction to Surah Mulk- সূরা মুলক এর পরিচিতিঃ

সূরা মূলক (Surah Mulk)পবিত্র কুরআন মাজিদ এর ৬৭ নাম্বার সূরা। এই সূরাটি মক্কায় নাজিল হয় এবং এটি মাক্কি শ্রেণীভুক্ত একটি সূরা। এই সুরাটির আয়াত সংখ্যা ৩০ টি।

এই সুরাটি নামকরন করা হয়েছে এর প্রথম আয়াত (তাবা-রকাল্লাযী বিইয়াদিহিল্ মুল্কু) এর মুলক থেকে।

সূরা মূলক(Surah Mulk) বাংলা উচ্চারণ ও ব্যাখ্যাঃ

আয়াত ১ঃ ﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾


বাংলা উচ্চারন- তাবা-রকাল্লাযী বিইয়াদিহিল্ মুল্কু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাইয়িন্ ক্বদীরু।


অর্থ – বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। আর তিনি সব কিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।
Blessed is He in whose hand is dominion, and He is over all things competent

আয়াত 2: ﴿الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ﴾

বাংলা উচ্চারন- আল্লাযী খলাক্বল্ মাউতা ওয়াল হাইয়া-তা লিইয়াব্লুওয়াকুম্ আইয়্যুকুম্ আহ্সানু ‘আমালা-; ওয়া হুওয়াল্ ‘আযীযুল্ গফূরু।


অর্থ – তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন৷ আর তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীলও৷

﴿الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا ۖ مَّا تَرَىٰ فِي خَلْقِ الرَّحْمَٰنِ مِن تَفَاوُتٍ ۖ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِن فُطُورٍ﴾

৩) তিনিই স্তরে স্তরে সাজিয়ে সাতটি আসমান তৈরী করেছেন৷ তুমি রহমানের সৃষ্টকর্মে কোন প্রকার অসংগতি দেখতে পাবে না৷ আবার চোখ ফিরিয়ে দেখ, কোন ক্রটি দেখতে পাচ্ছ কি?

﴿ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ﴾

৪) তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখ, তোমার দৃষ্টি ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে৷

﴿وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ﴾

৫) আমি তোমাদের কাছের আসমানকে সুবিশাল প্রদীপমালায় সজ্জিত করেছি৷ আর সেগুলোকে শয়তানদের মেরে তাড়ানোর উপকরণ বানিয়ে দিয়েছি৷ এসব শয়তানের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি৷

﴿وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ ۖ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ﴾

৬) যেসব লোক তাদের রবকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি৷ সেটি অত্যন্ত খারাপ জায়গা৷

﴿إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ﴾

৭) তাদের যখন সেখানে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা তার ভয়ানক গর্জনের শব্দ শুনতে পাবে

﴿تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ ۖ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ﴾

৮) এবং তা টগবগ করে ফুটতে থাকবে৷ অত্যাধিক রোষে তা ফেটে পড়ার উপক্রম হবে৷ যখনই তার মধ্যে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে তখনই তার ব্যবস্থাপকরা জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কাছে কি কোন সাবধানকারী আসেনি?

﴿قَالُوا بَلَىٰ قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِن شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ﴾

৯) তারা জবাব দেবে , হাঁ আমাদের কাছে সাবধানকারী এসেছিলো৷ কিন্তু আমরা তাকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করেছিলাম এবং বলেছিলাম আল্লাহ কিছুই নাযিল করেননি৷ তোমরাই বরং বিরাট ভুলের মধ্যে পড়ে আছো৷

﴿وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ﴾

১০) তারা আরো বলবেঃ আহা! আমরা যদি শুনতাম এবং বিবেক -বুদ্ধি দিয়ে বুঝতাম৷ তাহলে আজ এ জ্বলন্ত আগুণে সাজাপ্রাপ্ত দের মধ্যে গন্য হতাম না৷

﴿فَاعْتَرَفُوا بِذَنبِهِمْ فَسُحْقًا لِّأَصْحَابِ السَّعِيرِ﴾

১১) এভাবে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করবে ৷ এ দোযখবাসীদের ওপর আল্লাহর লানত৷

﴿إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالْغَيْبِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ﴾

১২) যারা না দেখেও তাদের রবকে ভয় করে, নিশ্চয়ই তারা লাভ করবে ক্ষমা এবং বিরাট পুরষ্কার ৷

﴿وَأَسِرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ ۖ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ﴾

১৩) তোমরা নীচু স্বরে চুপে চুপে কথা বলো কিংবা উচ্চাস্বরে কথা বলো (আল্লাহর কাছে দু”টো সমান) তিনি তো মনের অবস্থা পর্যন্ত জানেন৷

﴿أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ﴾

১৪) যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই কি জানবেন না? অথচ তিনি সুক্ষ্মদর্শী ও সব বিষয় ভালভাবে অবগত৷

﴿هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِن رِّزْقِهِ ۖ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ﴾

১৫) তিনিই তো সেই মহান সত্তা যিনি ভূপৃষ্ঠকে তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন৷ তোমরা এর বুকের ওপর চলাফেরা করো এবং আল্লাহর দেয়া রিযিক খাও৷ আবার জীবিত হয়ে তোমাদেরকে তার কাছেই ফিরে যেতে হবে৷
﴿أَأَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاءِ أَن يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ﴾

১৬) যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের মাটির মধ্যে ধসিয়ে দেবেন এবং অকস্মাৎ ভুপৃষ্ঠ জোরে ঝাঁকুনি খেতে থাকবে, এ ব্যাপারে কি তোমরা নির্ভয় হয়ে গিয়েছো?

﴿أَمْ أَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاءِ أَن يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا ۖ فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ﴾

১৭) যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী হওয়া পাঠাবেন -এ ব্যাপরেও কি তোমরা নির্ভয় হয়ে গিয়েছো? তখন তোমরা জানতে পারবে আমার সাবধানবাণী কেমন?

﴿وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ﴾

১৮) তাদের পূর্বের লোকেরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল৷ ফলে দেখো, আমার পাকড়াও কত কঠিন হয়েছিল৷

﴿أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ ۚ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَٰنُ ۚ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ﴾

১৯) তারা কি মাথার ওপর উড়ন্ত পাখীগুলোকে ডানা মেলতে ও গুটিয়ে নিতে দেখে না?রহমান ছাড়া আর কেউ নেই যিনি তাদেরকে ধরে রাখেন৷ তিনিই সবকিছুর রক্ষক৷

﴿أَمَّنْ هَٰذَا الَّذِي هُوَ جُندٌ لَّكُمْ يَنصُرُكُم مِّن دُونِ الرَّحْمَٰنِ ۚ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ﴾

২০) বলো তো, তোমাদের কাছে কি এমন কোন বাহিনী আছে যা রহমানের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? বাস্তব অবস্থা হলো, এসব কাফেররা ধোঁকায় পড়ে আছে মাত্র৷

﴿أَمَّنْ هَٰذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ ۚ بَل لَّجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ﴾

২১) অথবা বলো,রহমান যদি তোমাদের রিযিক বন্ধ করে দেন তাহলে এমন কেউ আছে,যে তোমাদের রিযিক দিতে পারে? প্রকৃতপক্ষে এসব লোক বিদ্রোহ ও সত্য বিমুখতায় বদ্ধপরিকর৷

﴿أَفَمَن يَمْشِي مُكِبًّا عَلَىٰ وَجْهِهِ أَهْدَىٰ أَمَّن يَمْشِي سَوِيًّا عَلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ﴾

২২) ভেবে দেখো,যে ব্যক্তি মুখ নিচু করে পথ চলেছে সে-ই সঠিক পথপ্রাপ্ত, না যে ব্যক্তি মাথা উচুঁ করে সোজা হয়ে সমতল পথে হাঁটছে সে-ই সঠিক পথ প্রাপ্ত?

﴿قُلْ هُوَ الَّذِي أَنشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ ۖ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ﴾

২৩) এদেরকে বলো, আল্লাহই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, তিনিই তোমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তিও বিবেক-বুদ্ধি দিয়েছেন৷ তোমরা খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকো ৷

﴿قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾

২৪) এদেরকে বলো, আল্লাহই সেই সত্তা যিনি তোমাদের পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন৷ আর তাঁরই কাছে তোমাদের সমবেত করা হবে৷

﴿وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ﴾

২৫) এরা বলে, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলো বলো এ ওয়াদা কবে বাস্তবায়িত হবে?

﴿قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ﴾

২৬) বলো,এ বিষয়ে জ্ঞান আছে শুধু আল্লার নিকট৷ আমি ষ্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র ৷

﴿فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَٰذَا الَّذِي كُنتُم بِهِ تَدَّعُونَ﴾

২৭) তারপর এরা যখন ঐ জিনিসকে কাছেই দেখতে পাবে তখন যারা অস্বীকার করেছে তাদের চেহারা বিবর্ণ হয়ে যাবে৷ আর তাদেরকে বলা হবে, এতো সেই জিনিস যা তোমরা চাচ্ছিলে৷

﴿قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَن مَّعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَن يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ﴾

২৮) তুমি এদেরকে বলো, তোমরা কখনো এ বিষয়ে ভেবে দেখেছো কি যে, আল্লাহ যদি আমাকে ও আমার সংগীদেরকে ধ্বংস করে দেন কিংবা আমাদের ওপর রহম করেন তাতে কাফেরদেরকে কঠিন শাস্তি থেকে কে রক্ষা করবে?

﴿قُلْ هُوَ الرَّحْمَٰنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا ۖ فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ﴾

২৯) এদেরকে বলো, তিনি অত্যন্ত দয়ালু, আমরা তাঁর ওপর ঈমান এনেছি এবং তাঁরই ওপর নির্ভর করেছি৷ তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে ষ্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে ডুবে আছে?
﴿قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَن يَأْتِيكُم بِمَاءٍ مَّعِينٍ﴾

৩০) এদেরকে বলো, তোমরা কি এ বিষয়ে কখনো চিন্তা-ভাবনা করে দেখছো যে, যদি তোমাদের কুয়াগুলোর পানি মাটির গভীরে নেমে যায় তাহলে পানির এ বহমান স্রোত কে তোমাদের ফিরিয়ে এনে দেবে?

Leave a comment